ইতিহাস তৈরি করে ফিরল চন্দ্রযান, সঙ্গে নিয়ে আসা নমুনা থেকে জানা যাবে বিরল তথ্য

Image
  প্রথমবারের মতো চাঁদের দূরবর্তী দিকের নমুনা সংগ্রহ করে সফলভাবে পৃথিবীতে ফিরেছে চীনের মহাকাশযান চ্যাংই-৬। পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদের ওই প্রান্তে আগে কখনও কোন যান অবতরণ করেনি। সম্পূর্ণ অজানা ছিল চাঁদের এই দূর্গম অঞ্চল। প্রায় দুই মাসের দীর্ঘ ঝুঁকিপূর্ণ অভিযান শেষে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৫ জুন) ইনার মঙ্গোলিয়া মরুভূমিতে চ্যাংই-৬ সফলভাবে অবতরণ করে। খবর  বিবিসির। বিজ্ঞানীরা অধীর আগ্রহে চ্যাংই-৬ এর জন্য অপেক্ষা করছেন কারণ মহাকাশযানটির নিয়ে আসা নমুনাগুলো কীভাবে গ্রহ-উপগ্রহগুলো গঠিত হয়েছিল সে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে। চলতি বছরের মে মাসে চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ হাইনানের ওয়ানচাং কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে চ্যাংই-৬ চন্দ্রযান উৎক্ষেপণ করা হয় ও রোববার এটি চাঁদের পৃষ্ঠে নামে। চীনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’- এর মতে, চ্যাং’ই-৬ প্রথমবারের মতো চাঁদের দূরবর্তী দিকের নমুনা সংগ্রহ করে ৪ জুন (মঙ্গলবার) যুক্তরাজ্যের সময় মধ্যরাত সাড়ে ১২টায় পৃথিবীর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলেছেন, চাঁদের পৃষ্ঠ খনন করার জন্য

কোকা-কোলা থেকে কম নয়, ২০২৪ সালেই ৪০ বিলিয়ন ডলার ছোঁবে গাঁজা শিল্প

 


স্ট্যাটিস্তার তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন গাঁজা শিল্প ২০২৪ সালেই ৪০ বিলিয়ন ডলার ছোঁবে, যা ২০১৬ সালে বৈধকণের শুরুর দিকে মাত্র ৭.৬ বিলিয়ন ডলার ছিল। আর ২০২৮ সাল নাগাদ তা ৬৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, সর্বশেষ ২০২৩ অর্থবছরে বিশ্বব্যাপী কোকা-কোলার আয় ছিল প্রায় ৪৬ বিলিয়ন ডলার। সে হিসেবে কোকা-কোলাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান গাঁজা শিল্প।

পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই গাঁজা অবৈধ। হাতেগোনা কয়েকটি দেশে ক্যানাবিসকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

চিকিৎসাজনিত ও বিনোদনের উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি রাজ্যে গাঁজা-মারিজুয়ানার ব্যবহার এখন বৈধ। নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, সান ফ্রান্সিসকো, শিকাগো এবং আটলান্টার রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটলেই আপনার নাকে আসবে গাঁজার ধোঁয়ার গন্ধ। 

বিনোদনের জন্য কলেরাডো রাজ্যে এক দশক আগে গাঁজাকে বৈধতা দেয়ার পর থেকে অন্যান্য রাজ্যগুলোও গাঁজার প্রতি সহনশীল হতে থাকে। একে একে ৪০টি রাজ্যে চিকিৎসার জন্য এবং ২৪টি রাজ্যে বিনোদনের জন্য গাঁজাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

প্রথমবারের মতো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিনের গাঁজার ব্যবহার অ্যালকোহলকে ছাড়িয়ে গেছে। 

চার দশক ধরে ন্যাশনাল সার্ভে অন ড্রাগ ইউজ অ্যান্ড হেলথের সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে অ্যাডিকশন জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক গাঁজাসেবন করেন এমন মানুষের সংখ্যা ছিল প্রায় এক কোটি ৭৭ লাখ। এ সময় দৈনিক মদপানকারীর সংখ্যা ছিল এক কোটি ৪৭ লাখ। এ তথ্যানুসারে আমেরিকার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গাঁজাসেবীরা মদপানকারীদের টপকে গেছে।

গাঁজা বৈধকরণ অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক উভয় ক্ষেত্রেই বয়ে এনেছে সুফল। গাঁজার বেচাকেনাকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বিলিয়ন ডলারের ইন্ডাস্ট্রি, রাজস্বও আসছে প্রচুর। তবে এর নেতিবাচক দিকও কম নয়। অতীতে গাঁজা সংশ্লিষ্ট অপরাধের কারণে এখনও অনেকে বিভিন্ন রাজ্যে কারাভোগ করছেন।

গ্যালাপ অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়মিত গাঁজাসেবনকারীর সংখ্যা ২০১৩ সাল থেকে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। সে সময় ৭ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নিয়মিত গাঁজাসেবন করলেও এখন সে সংখ্যা ১৭ শতাংশের কাছাকাছি বা প্রায় ৪ কোটি ৪০ লাখ মানুষ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বিশ্বের গাঁজার অন্যতম বৃহত্তম ভোক্তা। 

এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি বড় পরিবর্তন, যারা কিনা বিংশ শতাব্দীতে অ্যালকোহল এবং অন্যান্য মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ করেছিল।


১৯৮০ এবং ১৯৯০-এর দশকে মারিজুয়ানাকে ভীতিকর, বিভ্রান্তিকর, কলঙ্কজনক এরকম নানা রকমের তকমা দেয়া হয়েছিল। 'মারিজুয়ানা' শব্দটি নিজেই একটি ভালো উদাহরণ। ১৯৪০-এর দশকে মেক্সিকান অভিবাসীদের সাথে গাঁজার যোগসূত্র স্থাপনের জন্য শব্দটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু ২০০০ সাল থেকে, বিশেষ করে ২০১৪ সালের পর থেকে জনমতে বিরাট পরিবর্তন এসেছে। ২০০০ সালে, মাত্র ৩০ শতাংশ মানুষ গাঁজা বৈধকরণকে সমর্থন করলেও বর্তমানে প্রায় ৭০ শতাংশ মার্কিনি এর পক্ষে।
ইয়েল সেন্টার ফর দ্য সায়েন্স অব ক্যানাবিস অ্যান্ড ক্যানাবিনয়েডসের পরিচালক ডক্টর দীপক ডি'সুজা বলেন, 'গাঁজাকে বৈধকরণ ও নিয়ন্ত্রণ করা এক জিনিস এবং বৈধকরণের পর বাণিজ্যিকীকরণ করা আরেক জিনিস। গাঁজার বাণিজ্যিকীকরণ এর ব্যবহার বাড়াবে। বিলিয়ন ডলারের গাঁজা শিল্পের মূল্য দিন দিন কেবল বাড়ছে। গাঁজা ব্যবসায়ীরা তাদের বিক্রি আরও বাড়াতে চান। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে তামাকের বাণিজ্যিকীকরণ করার পর কীভাবে সবকিছু বদলে দিয়েছে!'
ডা. ডি'সুজা গাঁজার পণ্যগুলো কত সহজে পাওয়া যায় এবং কীভাবে সেগুলো বাজারজাত করা হয় সে সম্পর্কে কথা বলেছেন। তিনি জানান, প্রায় ৫৪ শতাংশ আমেরিকানরা এমন রাজ্যে বাস করেন যেখানে বিনোদনের জন্য গাঁজা সম্পূর্ণ বৈধ এবং ৭৯ শতাংশ, অন্তত একটি ডিসপেনসারি আছে যেখানে ওষুধ হিসেবে গাঁজা বিক্রি করা হয়, এমন কাউন্টিতে বাস করেন। 
অন্যদিকে, এটাও মাথায় রাখতে হবে যে, ধূমপান করা যায় এমন গাঁজা গাছের ফুল ও পাতা ছাড়াও অনিয়ন্ত্রিত টিএইচসিযুক্ত ক্যান্ডি এবং কোমল পানীয়ের মতো অনেক পণ্য বাজারে এখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। 
এগুলো প্রায়শই বিভিন্ন রঙিন প্যাকেজিংয়ে আসে যা দেখতে বাচ্চাদের জন্য বিক্রি হওয়া পণ্যের মতো, যেগুলোতে গাঁজার উপাদান থাকার প্রশ্নই ওঠে না। এটি অতি বাণিজ্যিকীকরণের আরেকটি বড় সমস্যা। 

কোকা-কোলাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে

স্ট্যাটিস্তার তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন গাঁজা শিল্প ২০২৪ সালেই ৪০ বিলিয়ন ডলার ছোঁবে, যা ২০১৬ সালে বৈধকণের শুরুর দিকে মাত্র ৭.৬ বিলিয়ন ডলার ছিল। ২০২৮ সাল নাগাদ তা ৬৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। টাকার হিসেবে এটা আসলেই একটা বড় অর্জন।

অন্যদিকে, সর্বশেষ ২০২৩ অর্থবছরে বিশ্বব্যাপী কোকা-কোলার আয় ছিল প্রায় ৪৬ বিলিয়ন ডলার। গাঁজা শিল্প থেকে সম্ভাব্য আয় (৪০ বিলিয়ন ডলার), যুক্তরাষ্ট্রের চকলেট শিল্পের দ্বিগুণ এবং বিশ্বব্যাপী কোকা-কোলার মোট আয়ের কাছাকাছি। কোকা-কোলার মোট রাজস্ব ২০০৭ সালে ২৮ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ২০১২ সালে সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছিল। প্রতিষ্ঠানটির মোট আয়ের এক তৃতীয়াংশই আসে উত্তর আমেরিকা থেকে। ২০২৩ সালে তাদের ব্র্যান্ড ভ্যালু দাঁড়ায় মোট ৯৮ বিলিয়ন ডলারে। 


বিভিন্ন রাজ্যে গাঁজার বৈধকরণের পর থেকে বিলিয়ন ডলারের এ শিল্প থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উল্লেখযোগ্য হারে রাজস্ব আদায় করছে। 

২০১৪ সালে, রাজ্যগুলো ওষুধি গাঁজা থেকে প্রায় ৭০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। অন্যান্য কিছু রাজ্যও গাঁজার বৈধতা দেয়ায় ২০২৩ সালের মধ্যে আয়ের পরিমাণ এক লাফে ৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। 

ভালো মুনাফা হওয়ায় গাঁজার পণ্য প্রচারে খুব একটা ইতস্তত বোধ আর কেউ করে না, বিশেষত এই শিল্পটি যেহেতু সারা দেশে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে।

গাঁজা ব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রচুর যুক্তি রয়েছে, বিশেষত স্বাস্থ্য সম্পর্কিত। ডা. ডি'সুজা বলেন, 'গাঁজার ব্যবহারের স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদি উভয় প্রভাব রয়েছে। স্বল্পমেয়াদি পরিণতি দ্বারা সেই প্রভাবগুলো বুঝিয়েছি যা গাঁজা সেবনের পরেই অবিলম্বে ঘটে। এর মধ্যে আছে, উদ্বেগ হ্রাস, ভালো ঘুম এবং প্রফুল্লতা। 

তবে গাঁজা সেবনের পর তা আপনার সাইকোমোটর সমন্বয়কে ব্যাহত করে যার কারণে যেকোনো ধরনের মোটরযান চালানোর সক্ষমতা হ্রাস পায়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, গাঁজা বৈধকরণের পর থেকে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ১০ শতাংশ মৃত্যুর হার বেড়েছে।

এবং মাঝারি এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব হিসেবে রয়েছে গাঁজায় আসক্তি এবং মানসিক স্বাস্থ্যের সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য ঝুঁকি।  

গাঁজা ব্যবহারের উচ্চহার এবং গাঁজার সাইকোঅ্যাকটিভ উপাদান টিএইচসির ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধির সাথে এই ঝুঁকিগুলো বাড়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১৯৯৫ সালে গাঁজায় চার শতাংশ টিএইচসি থাকলেও ২০১৭ সালে তা ১৭ শতাংশে পৌঁছেছে এবং সম্ভবত এর পরিমাণ এখন আরও বেশি। অতিরিক্তভাবে, গাঁজার ড্যাবস এবং বৈধ ভক্ষণযুক্ত পণ্যগুলোতে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত টিএইচসি থাকার সম্ভাবনা আছে। 

বিশেষত যারা কৈশোর বয়স থেকেই গাঁজাসেবন শুরু করেন তাদের সিজোফ্রেনিয়া, বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। অনেকেই হতাশায়, বিষণ্ণতায় ভোগেন এমনকি আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নেন।  

এই ঝুঁকি সত্ত্বেও, পরিমিত গাঁজার ব্যবহার কঠিন ড্রাগ, অ্যালকোহল এবং তামাকের তুলনায় শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিকভাবে কম ঝুঁকিপূর্ণ। 

বৈধকরণের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো গাঁজা সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য এখনও হাজার হাজার ব্যক্তি কারাগারে রয়েছেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, 'গাঁজা ব্যবহার বা রাখার জন্য কাউকে কারাগারে পাঠানো উচিত নয়।'

নির্বাচনী বছরে যেখানে তরুণ লোকদের ভোট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সেখানে বাইডেন এই বিবৃতিগুলো সমর্থন অর্জনের জন্যও ব্যবহার করতে পারেন। গুজব রয়েছে যে বাইডেন ছোটখাটো গাঁজা সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য কারাবন্দি হাজার হাজার ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়ার আদেশে স্বাক্ষর করবেন।

যদিও মার্কিন সরকার এখনও ফেডারেল পর্যায়ে গাঁজাকে বৈধ রাজি হয়নি। তবে বিচার বিভাগ সম্প্রতি হেরোইনের মতো লেভেল-১ ড্রাগ থেকে গাঁজাকে লেভেল-৩ ড্রাগে শ্রেণিবদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পরিবর্তনটি গাঁজার ব্যবহার এবং ঝুঁকি সম্পর্কে আরও বিশদ অধ্যয়নের সুযোগ উন্মুক্ত করবে।


Comments

Popular posts from this blog

এসি চালু অবস্থায় সিলিং ফ্যান চালানো কি ঠিক?

Eid ul Adha 2024 date: When will Muslims in Saudi Arabia, India, UAE, US, UK, other countries celebrate Bakra Eid

সেন্ট মার্টিনের নিরাপত্তা নিয়ে গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান আইএসপিআরের