বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত রোগগুলোর মধ্যে ডায়াবেটিস অন্যতম। প্রতিদিন যেভাবে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে, তা সত্যিই আশঙ্কাজনক। তারপরও বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী বেশির ভাগ ডায়াবেটিস রোগী এখনো জানেই না যে, তাদের ডায়াবেটিক রয়েছে। তাছাড়া ডায়াবেটিস নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন রকম ভুল ধারণা।

ডায়াবেটিস একটি বিপাকজনিত রোগ, যেখানে রক্তের শর্করার পরিমাণ স্থায়ীভাবে বৃদ্ধি পায়। অগ্ন্যাশয় হতে নিঃসৃত ইনসুলিনের পরিমাণ বা কার্যক্ষমতা কমে গেলে ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। বয়স‑ওজন‑স্থান জাতিভেদে যে কেউ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন।

একজন সাধারণ মানুষ যে সমস্ত লক্ষণ দেখলে অবশ্যই ডায়াবেটিস পরীক্ষা করাবে তা হলো–
১. ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া। 
২. অনেক বেশি পিপাসা লাগা।
৩. খুব বেশি ক্ষুধা পাওয়া।
৪. পর্যাপ্ত পরিমাণ খাওয়া সত্ত্বেও ওজন কমে যাওয়া।
৫. প্রচণ্ড ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব করা।

এ ছাড়া আরও কিছু লক্ষণ দেখা দিলেও ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা জরুরি। যেমন–
১. চোখে ঝাপসা বা কম দেখলে।
২. শরীরে যেকোনো ক্ষত বা ইনফেকশন শুকাতে বিলম্ব হলে।
৩. একই ধরনের ইনফেকশন ঘন ঘন দেখা দিলে।
৪. বিভিন্ন প্রকার চর্মরোগ; যেমন: খোশ-পাঁচড়া হলে এবং উক্ত রোগে ওষুধ সেবনের পরও তা ঠিক না হলে।
৫. শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গোটা বা ফোঁড়া বারবার হলে এবং তা না শুকালে। 
৬. ঘনঘন প্রস্রাবের কারণে ইনফেকশন হলে। 
৭. বারবার সন্তান নষ্ট হলে।
৮. হঠাৎ করে বিনা কারণে ওজন কমে গেলে।
৯. শরীর অতিরিক্ত দুর্বল লাগলে।

এসব উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই পরীক্ষা করে দেখা উচিত, ডায়াবেটিক আছে কি না। কিন্তু শতকরা ৫০ ভাগ ক্ষেত্রে ডায়াবেটিক রোগীদের কোনো লক্ষণ থাকে না। ফলে সাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়েই ডায়াবেটিক ধরা পড়ে। এ জন্য বয়স ত্রিশের বেশি হলে, ওজনাধিক্য থাকলে, পরিবারে ডায়াবেটিসের ইতিহাস থাকলে অবশ্যই মাঝেমাঝে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা উচিত। অন্যথায় লক্ষণ না থাকার কারণে ডায়াবেটিস নির্ণয়ে বিলম্ব হলে বিভিন্ন রকমের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও জটিলতা দেখা দিতে পারে।

লেখক: নিউট্রিশন অফিসার, ন্যাশনাল হেলথকেয়ার নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি

THE BUSINESS WORLD