আল্লাহ তাআলা যে চার মাসে যুদ্ধবিগ্রহ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করেছেন। যে মাসগুলোকে বিশেষভাবে সম্মানিত করেছেন, মহররম তার অন্যতম। এটি হিজরি বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস। মহররম মাসের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়। আশুরার দিনে অনেক নবীর দোয়া কবুল করেছেন আল্লাহ তাআলা। তাই এ দিন দোয়া কবুলের দিন।

রমজানের রোজার আগে আশুরার রোজা ফরজ ছিল। 

ইসলামি শরিয়তের মানদণ্ডে আশুরার অনেক তাৎপর্য ও ফজিলত রয়েছে। এ ছাড়া আশুরায় বেশ কিছু করণীয় কাজও আছে। জাহেলিয়া যুগে প্রাচীন আরবদের মধ্যে গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হতো এই দিনটি। 

আশুরার দিন মক্কার মানুষ রোজা রাখত এবং কাবাঘরের গিলাফ পরিবর্তন করত। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দিনে রোজা রাখেন এবং অন্যদের রোজা রাখার উৎসাহ ও নির্দেশ দেন। এ ছাড়া রমজানের রোজার আগে আশুরার রোজা ফরজ ছিল। রমজানের রোজা ফরজ হলে আশুরার রোজা মোস্তাহাব পর্যায়ের ঐচ্ছিক ইবাদত হিসেবে গণ্য করা হয়।


হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তুমি যদি রমজানের পর রোজা রাখতে চাও, তাহলে মহররমে রোজা রেখো। কেননা, মহররম আল্লাহর মাস। এ মাসে এমন একটি দিন রয়েছে, যেদিন আল্লাহতায়ালা (অতীতে) অনেকের তওবা কবুল করেছেন এবং ভবিষ্যতেও অনেকের তওবা কবুল করবেন।’ (জামে তিরমিজি: ৭৪১)


এক হাদিসে নবীজি বলেছেন, ‘মহররম হচ্ছে আল্লাহর মাস। এ মাসে এমন এক দিন (আশুরা) আছে, যেদিন আল্লাহ তাআলা (অতীতে) অনেকের তওবা কবুল করেছেন। ভবিষ্যতেও অনেকের তওবা কবুল করবেন। (জামে তিরমিজি: ৭৪১)

আমাদের উচিত হবে আশুরার দিনে আন্তরিক তওবা করা। তওবার দোয়াগুলো যথাযথভাবে পাঠ করা। তওবার বিভিন্ন দোয়ার উল্লেখ রয়েছে হাদিসে। এমনকি কিতাবে আশুরার দিনের একটি দোয়াও পাওয়া যায়।


اللهم يا قابل توبة آدم عليه السلام يوم عاشوراء ويا مسكن سفينة نوح عليه السلام على الجودي يوم عاشوراء. ويا غياث إبراهيم عليه السلام يوم عاشوراء ويا فارج كربة ذي النون يوم عاشوراء. ويا غافر ذنوب داود عَلَيْهِ السَّلاَمُ يَومَ عَاشُوْرَاء. ويا جامع دعوة موسى وهارون عليهما السلام يَومَ عَاشُوْرَاء. ويا خالق جبريل وميكائيل وإسرافيل وعزرائيل يَومَ عَاشُوْرَاء. ويا خالق العرش والكرسي واللوح والقلم والسموات والأرض يَومَ عَاشُوْرَاء اقض حوائجنا وحوائج جميع المسلمين ويا قاضي الحاجات ويا دافع السيئات. ويا حي يا قيوم. يا ذا الجلال والإكرام. ويا مَالِكَ يَوْمِ الدِّينِ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ اهدِنَا الصِّرَاطَ المُستَقِيمَ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنعَمتَ عَلَيهِمْ غَيرِ المَغضُوبِ عَلَيهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ توفنا مسلمين وألحقنا بالصالحين. وصلى الله على سيدنا محمد وآله وصحبه وسلم. سبحان ربك رب العزة عما يصفون وسلام على المرسلين والحمد لله رب العالمين

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইয়া ক্ববিলা তওবাতি আদামা আইহিস সালাম, ইয়াওমা আশুরাআ, ওয়া ইয়া মাসকানি সাফিনাতি নুহা আলাল জুদি ইয়াওমা আশুরাআ, ওয়া গিয়াসা ইবরাহিমা ইয়াওমা আশুরাআ ওয়া ইয়া কারবাতি জিন নুনা ইয়াওমা আশুরাআ, ওয়া ইয়া গাফিরা জুনুবি দাউদা আলাইহিস সালামু ইয়াওমা আশুরাআ। ওয়া ইয়া দাওয়াতি মুসা ওয়া হারুন ইয়াওমা আশুরাআ। ওয়া ইয়া খালিকা জিররিলা ওয়া মিকাইলা ওয়া ইসরাফিলা ও আজরাইলা ইয়াওমা আশুরাআ। ওয়া ইয়া খালিকাল আরশা ওয়াল কুরসিয়্যা ওয়াল লাওহা ওয়াল কলমা, ওয়াস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা ইয়াওমা আশুরা। আকজি হাওয়াইজানা ওয়া হাওয়ায়িজা জামিয়াল মুসলিমিন। ওয়া ইয়া কাজিয়াল হাজাত, ওয়া ইয়া দাফিয়াস সাইয়্যাত। ওয়া ইয়া হায়্যু ইয়া ক্বাইয়্যুম। ইয়া জালজালালি ওয়াল ইকরাম। ওয়া ইয়া মালিকা ইয়াও মিদ দিন, ইয়্যাকা নাআবুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতায়িন। ইহদিনাস সিরাতাল মুসতাকিম। সিরাতাল লাজিনা আনআমতা আলাইহিম। গাইরিল মাগদু-বি আলাইহিম ওয়ালাদ দললিন। তাওয়াফফানা মুসলিমিন ওয়াআল হিকনা বিস সলিহিন, ওয়া সল্লাল্লাহু আলা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মদ, ওয়া আলিহি ওয়া সহবিহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানা রব্বিকা রব্বিল ইজ্জাতি আম্মা ইয়াসিফুন ওয়া সালামুন আলাল মুরসালিন, ওয়াল হামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন।


 অর্থ: আমি আল্লাহর প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করছি। আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর নিকট তাওবা করছি। আয়েশা (রা.) বলেন, রসুল রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মৃত্যুর আগে এই ইস্তেগফারটি অধিক মাত্রায় পড়তেন। (মুসলিম, রিয়াদুস সালেহিন: ১৮৮৬)

 

أَسْتَغْفِرُ اللّٰهَ وَأَتوبُ إِلَيْهِ উচ্চারণ: আসতাগফিরুল্লাহা ওয়া আতূবু ইলাইহি।’ অর্থ: ‘আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাচ্ছি এবং তার নিকট তাওবা করছি।

 

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চেয়ে আর কাউকে এটি অধিক পরিমাণে পড়তে দেখিনি। (সহিহ ইবনু হিব্বান: ৯২৮)

The Business World